আমি কিভাবে মোটা হবো এবং মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যই হলো আজকের পোস্টের বিষয়বস্তু। আপনাকে মোটা হতে হলে নিয়মিত বিশ্রাম, পরিমিত ঘুম, সময়মত খাবার খাওয়া, ব্যায়াম করা সহ শরীর গঠনের নানান বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। আবার খাবারের পাশাপাশি প্রকৃতির মাঝে আপনাকে সময় দিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে হবে তাহলেই আপনি মোটা হতে পারবেন।
মোটা হওয়ার জন্য খাবার রুটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি রুটিন করে নিয়মানুসারে খাবার গ্রহণ করতে পারেন। আমরা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকি আমি মোটা হবো কিভাবে? তাদেরকর বলছি, আপনি চাইলে ডেক্সোনা [Dexona], সিপ্লাক্টিন [Ciplactin], প্রাক্টিন [Practin], ডেকডান [Decdan] এই ওষুধগুলো নিয়মিত সেবন করা। এতে আপনি স্থায়ীভাবে মোটা পারবেন তাও আবার মাত্র ৭ দিনে মোটা হতে পারবেন।
মোটা হওয়ার ওষুধ সম্পর্কে যদি বলি তাহলে গুড হেলথ, সিনকারা, রুচিবট নামে ট্যাবলেট, আলফামালট (হোমিও), বডি বিল্ডার, রুচি প্লাস সিরাপ, পিউটন সিরাপ, মোটা হওয়ার সাপ্লিমেন্ট এই ওষুধগুলোর নামই আমাদের মাথায় প্রথম আসে। তবে আপনারা সবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ খেয়ে মোটা হতে পারেন। এতে আপনারা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই সহজে মোটা হতে পারবেন। তো চলুন মোটা হওয়ার আরো সকল উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিই।
উত্তর যদি হয় হ্যা, তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য। মোটা হওয়ার যত উপায় আছে সবই মিলে আজকের পোস্টটি।
আমি মোটা হবো কিভাবে? প্রশ্নটা হয়তো আপনার মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। আজকের পোস্টে জানবো মোটা হওয়ার সহজ উপায় কী, ৭ দিনে মোটা হওয়া, ইসলামে মোটা হওয়ার উপায়, মোটা হওয়ার ঔষধের নাম, স্থায়ী ভাবে মোটা হওয়া সহ ইত্যাদি উপায়।
ওজন কম হওয়ার কারণ কী?
নানা কারণবশত মানুষের ওজন কম হতে পারে বা কমে যেতে পারে। এর মধ্যে প্রধান কারণ হলো অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস। যা শরীরের জন্য খুবই মারাত্মক ক্ষতিকর। আবার শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগের কারনেও ওজন কমে যেতে পারে।
যেমন বলা যায় ডায়বেটিস, ডায়রিয়া, ক্যান্সার, কিডনির সমস্যা ইত্যাদি। আবার মদ্যপান অথবা ড্রাগ নেওয়ার জন্যও ওজন কমে যেতে পারে। তাই আমাদের সর্বদা নিজের শরীরের দিকে খেয়াল রেখা জরুরি।
আমি কিভাবে মোটা হবো
মোটা হওয়ার জন্য প্রথমত আপনাকে নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। দুধ, ডিম, মধু, মাংস, কাজুবাদাম সহ সকল প্রকার উন্নত প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্য। দুধ, ডিম, মাংস, বাসায় বানানো কেক ও কাজুবাদামে প্রচুর প্রোটিন উপস্থিত থাকার কারণে আপনি অল্প দিনেই মোটা হতে পারবেন।
আমরা অনেকেই মোটা থেকে চিকন হতে চাই। কিন্তু খুব কম সংখ্যক মানুষই মোটা হওয়ার জন্য আপ্রান চেষ্টা করে থাকে। আসলেই মোটা হওয়ার ইচ্ছাটা যে কত করুন তা কেবল চিকন মানুষেরাই বুঝবে।
আমরা মোটা হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলেও মোটা হতে পারি না কেবলমাত্র একটি কারনে। সেটি হচ্ছে মোটা হওয়ার উপায় না জানা। তো আজ আমরা আলোচনা করবো কিভাবে সুস্বাস্থ্যবান ও মোটা হওয়া যায়?
মোটা হওয়ার সহজ উপায়
মোটা হওয়ার জন্য বিস্তারিত পদ্ধতি এবং নিয়মকানুন সম্পর্কে জানার আগে আমাদের প্রথমত জানতে হবে আসলে মানুষের ওজন কম হয় কেন? কি কি কারনে ওজন কমে যায়?
এরপরই আমরা জানতে পারবো কিভাবে সহজেই মোটা হওয়া যায়? আমরা অনেকেই মোটা হওয়ার ঔষধের নাম জানতে চায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অবশ্যই খুবই মারাত্মক ক্ষতিকর। এটা থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিৎ। তো দেরি না করে চলুন আমরা এখন জেনে নিই মোটা হওয়ার সহজ ও ঘরোয়া উপায়গুলো। নিচে কিছু মোটা হওয়ার কার্যকরী ও সহজ উপায় তুলে ধরছি।
১. ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করা
শরীরচর্চার কথা শুনে হয়তো ভাবছেন আরেহ ব্যায়াম তো করা হয় ওজন কমানোর জন্য, কিন্তু বিষয়টি আসলেই ভুল ভাবছেন। ওজন কমাতে যেমন ব্যায়াম এর বিকল্প নেই তেমনি ওজন বাড়াতে ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যায়ামের কথা বলতে শুধু দৌড় ঝাপই নয় বরং নিয়ম করে জিম করা। শারীরিক কসরত সহ সকল প্রকার শরীরচর্চা অনুশীলন করা। আপনি এটি একমাস চালিয়ে যেতে থাকবেন। একমাস পরে আপনার পরিবর্তন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।
২. বার বার খাবার খাওয়া
প্রতিটি মানুষেরই প্রয়োজন বার বার খাবার গ্রহণ করে নিজেকে সুস্থ রাখা। আপনাকে অন্তত দুই ঘন্টার পর পর সামান্য সামান্য করে হলেও খাওয়া দাওয়া করতে হবে।
খাবারের পাশাপাশি পানি খাওয়ারও বিকল্প নেই। আপনি আপনার খাবারের লিস্টে দুধ, ডিম, মুরগীর মাংস, ফলমূল ইত্যাদি রাখতে পারেন। এ পদ্ধতি মোটা হওয়ার জন্য খুবই সহজলভ্য ও কার্যকর।
৩. কার্বোহাইড্রেড সম্পন্ন খাবার গ্রহণ
ওজন বৃদ্ধি ও মোটা হওয়ার জন্য কার্বোহাইড্রেড সম্পন্ন খাবারের বিকল্প নেই। আপনার প্রতিদিনের খাবারের লিস্টে অবশ্যই কার্বোহাইড্রেড সম্পন্ন কিছু খাবার রাখার চেষ্টা করবেন।
এখন হয়তো আপনি ভাবছেন কার্বোহাইড্রেড খাবার আবার কি? চিন্তা নেই, আমি বলে দিচ্ছি। কার্বোহাইড্রেড সম্পন্ন খাবার হলো ভাত, রুটি ইত্যাদি।
তবে অতিরিক্ত খাবেন না, কারণ অতিরিক্ত কোন কিছুই শরীরের জন্য ভালো নয়। তাই প্রতিদিন কার্বোহাইড্রেড সম্পন্ন খাবারের বিকল্প নেই। এটি মোটা হওয়ার একটি কার্যকরী উপায়।
৪. বেশি বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করা
আমরা যখন আমাদের শরীরের ওজন কমাতে চাই তখন অবশ্যই ক্যালোরি কম গ্রহণ করি। কিন্তু মোটা হওয়ার ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্পুর্ন বিপরীত। মোটা হওয়ার জন্য অবশ্যই আমাদের দ্বিগুণ ক্যালোরি গ্রহণ করা উচিৎ।
আপনি দিনে নুন্যতম ৬০০ থেকে ৭০০ ক্যালোরি বেশি গ্রহণ করতে পারেন মোটা হওয়ার জন্য। এভাবে আপনি আপনার ক্রিয়া চালিয়ে যাবেন। এক সপ্তাহ পর দেখবেন আপনার ওজন বৃদ্ধি পেয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
৫. সঠিক মাত্রায় প্রোটিন গ্রহণ করা
ক্যালোরিই একমাত্র ওজন বৃদ্ধির জন্য সহায়ক নয়। বরং প্রোটিনের গুরুত্বও কম নেই এর চেয়ে। আপনি নিয়মিত প্রোটিন গ্রহণ না করলে ক্যালোরি আপনার অতিরিক্ত ফ্যাটের কারণ হতে পারে।
তাই অবশ্যই প্রতিদিন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাবেন যেমন, দুধ, ডিম, ডাল, মাংস ইত্যাদি।
৬. ড্রাই ফ্রুটস খাবার খাওয়া
ড্রাই ফ্রুটসে বিদ্যমান ক্যালোরি এবং ফ্যাট আপনার ওজন বৃদ্ধিতে প্রচুর সহায়ক হবে। আপনি প্রতিদিন ঘুমানোর পূর্বে ও ঘুম থেকে উঠে ২-৪ টি করে কাজু বাদাম ও কিসমিস খেতে পারেন।
আবার সকালের খাবারে অবশ্যই আমন্ড বা পেস্তা রাখতে পারেন। এ নিয়ম অনুসরণ করে এক সপ্তাহ পরই আপনি আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধির লক্ষ্মণ বুঝতে পারবেন।
৭. সর্বদা টেনশনমুক্ত থাকা
মোটা হওয়ার চরম শত্রু হলো অতিরিক্ত টেনশন করা। তাই আমাদের উচিত অযথা টেনশন না করা। সর্বদা চেষ্টা করবেন টেনশন না করার জন্য। তাহলেই আপনি নিজের শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে সফল হবেন।
৮. প্রতিদিন পরিমিত ঘুমানো
শরীরের সকল প্রকার ভারসাম্য ঠিক রাখতে ঘুমের বিকল্প নেই। আপনাকে অন্তত প্রতিদিন ৮ ঘন্টা করে ঘুমানো জরুরি। এর কম সময় ঘুমানো অবশ্যই আপনার শরীরের জন্য ভালো নয়।
আর অবশ্যই মনে রাখতে হবে যেন আপনি রাত ১০.০০ PM এর মধ্যে ঘুমিয়ে যাবেন এবং সকাল ৬.০০ AM এর মধ্যে উঠে পড়বেন। তাহলেই আপনি আপনার শরীরের সফলতা অর্জন করতে ও উপলব্ধি করতে পারবেন।
৯. ঘুমানোর পূর্বে মধু ও দুধ খাওয়া
ঘুমানোর আগে মধু ও দুধ খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটি আপনার শরীরকে করবে সুস্থ সবল ও স্ট্রং। আপনার শরীর হবে ক্যালোরি সম্পন্ন ও মোটা তাজা। এক্ষেত্রে দুধ ও মধু মিশিয়ে খাওয়া উপকারী। এই নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন।
১০. ডায়েটে চিজ ও চকলেট রাখা জরুরি
আমরা মুলত বাইরের খাবার খাওয়া থেকে সবাইকে বিরত থাকতে বলি। কিন্তু আপনাকে মোটা হতে হলে অবশ্যই বাইরের খাবার খেতে হবে। যেমন, আইসক্রিম, বার্গার ইত্যাদি। আবার প্রতিদিনের খাবারে চকলেট ও চিজ রাখা জরুরি।
৭ দিনে মোটা হওয়ার সহজ উপায়
আপনি ৭ দিনে মোটা হওয়ার জন্য গুড হেলথ, সিনকারা, রুচিবট নামে ট্যাবলেট, আলফামালট (হোমিও), বডি বিল্ডার, রুচি প্লাস সিরাপ, পিউটন সিরাপ, মোটা হওয়ার সাপ্লিমেন্ট এই ওষুধগুলো খেতে পারেন। এতে আপনি ৭ দিনে সহজেই মোটা হতে পারবেন।
আমরা আপনাকে এ নিশ্চয়তা কখনোই দিতে পারবো না যে আপনি মাত্র সাতদিনেই মোটা হতে পারবেন। তবে আপনার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে এর জন্য শস্যদানা, শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদির দিকে নজর দিতে হবে।
বয়স অনুযায়ী শরীরের প্রতিদিন ক্যালরি চাহিদা
২. ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য দরকার – ৩২০০ ক্যালরী
৩. ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের জন্য দরকার – ২০০০ থেকে ২২০০ ক্যালরী
৪. প্রাপ্তবয়স্ক নারীর জন্য – ১৬০০ থেকে ২৫০০ ক্যালরী
৫. প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য – ২০০০ থেকে ৩০০০ ক্যালরী
মোটা হওয়ার জন্য খাবার রুটিন
২. ২ টি ডিম
৩. ২ টি খেজুর
২. ২ টি কলা
৩. এলাচ পাউডার ১/২ চামচ
৪. দেশি ঘি ১ চামচ
সকাল ও বিকালের নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।
খেজুর খেলে কি মোটা হওয়া যায়?
হ্যা, খেজুর খেলে অবশ্যই মোটা হতে পারবেন। কারণ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ শক্তি, চিনি, প্রোটিন ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন। যেমন, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-কে ইত্যাদি। আবার বিভিন্ন খনিজও বিদ্যমান।
ইসলামে মোটা হওয়ার উপায়
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে মোটা হওয়ার জন্য রসূল স. এর সুন্নতী পদ্ধতি হচ্ছে পাকা খেজুর এর সাথে শসা খাওয়া। এ সম্পর্কে দুইটি মূল্যবান হাদিস রয়েছে, প্রথমটি হলো ‘সুনানে আবু-দাউদ – ৩৯০৩ নাম্বার হাদিস ও দ্বিতীয়টি ‘আবু-দাউদ – ৩৩২৪’ দুইটিই মূলত সহীহ হাদিস।
মোটা হওয়ার ঔষধের নাম
২. সিনকারা
৩. রুচিবট নামে ট্যাবলেট
৪. আলফামালট (হোমিও)
৫. বডি বিল্ডার
৬. রুচি প্লাস সিরাপ।
৭. পিউটন সিরাপ
৮. মোটা হওয়ার সাপ্লিমেন্ট
স্থায়ী ভাবে মোটা হওয়ার ঔষধ
২. সিপ্লাক্টিন [Ciplactin]
৩. প্রাক্টিন [Practin]
৪. ডেকডান [Decdan]
ওজন বৃদ্ধিতে ও শরীরের যাবতীয় ক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য পানি পান করা খুবই প্রয়োজন। কেননা পানির আরেক নাম জীবন। শরীরবৃত্তীয় সকল প্রকিয়ার জন্য পানির বিকল্প নেই।
সুস্বাস্থবান হতে হলে নিজেদের শরীরের প্রতি সবাইকে যত্নশীল হতে হবে। সবশেষে বলবো নিজের যত্ন নিন সর্বদা সুস্থ থাকুন ও যেখানেই থাকুন নিরাপদে থাকুন। দরকারি সেবা.কম এর পক্ষ থেকে সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিদায় নিচ্ছি, ধন্যবাদ সবাইকে।